East Bengal Sports

মেহতাব এর শেষ খেলায় সতীর্থরা পশে থাকলেন না|

Mehtab

মেহতাব এর কথা লিখতে গিয়ে পুরোনো দিনের কিছু কথা মানে পরে গেল|

আমাদের ছোটবেলায় দুরদর্শন ছিল একমাত্র টিভি চ্যানেল|
অনুষ্ঠান হতো খুব কম কিন্তু তার গুণমান ছিল খুব ভালো| প্রযুক্তিগত সমস্যা থাকলেও কলা কুশলী রা ছিল উন্নত মানের|
তো সেই যুগে কিছু সুন্দর তথ্যচিত্র তৈরী হতো|

একটা তথ্য চিত্রের কথা মনে পরে|

অফিসের বেয়ারা বড় বাবুর কাছে এসে বললেন যে – বাবু আমার আগামী মাসে রিটায়ারমেন্ট|
বাবু বললেন হ্যান তুমি আর আমি তো একই বয়েসী|
প্রায় একই সময়ে অফিস শুরু করি|
কয়েকদিন আগে পরে| আমার ও আগামী মাসে রিটায়ারমেন্ট|
চলো একই দিনে রিটায়ার করি|
অফিসের বেয়ারা খুব উল্লসিত|
বাড়িতে গিয়ে তিনি তার পরিবার কে জানান সব কথা|
নাতনি কে বলেন যে তাকে সবাই ফুল মালা দেবে|
তাকে বক্তিতা দিতে বলবে| যথারীতি রিটায়ারমেন্টের দিন আসে|
ভদ্রলোক নতুন পাঞ্জাবি পরে নিজের নাতনি কে নিয়ে অফিসে যান| নিজের শেষ দিন বলে একটু রয়ে সয়ে দেরি করেই যান|

অফিসে পৌঁছে তিনি দেখেন সবাই বড় বাবু কে নিয়ে ব্যাস্ত|
তাকে দেখতে পেয়ে এক কেরানি এগিয়ে এসে ধমকিয়ে বলে “তোমার আক্কেল নেই? জান আজ বড় বাবুর অফিসে শেষ দিন| এত কাজ | আর এত দেরি করে আসছো?” |
ভদ্রলোকের মুখে এক ব্যাথার ছাপ ফুটে ওঠে|
তার নাতনি বলতে থাকে দাদু তুমি যে বললে ওরা তোমাকে ফুলের মালা পোড়াবে পোড়ালো না তো|

তথ্যচিত্রের সাথে জীবনের মিল|

কাল সন্ধ্যা বেলা থেকে এই তথ্যচিত্রটি বার বার মনে পড়তে থাকে|
ভারতের অন্যতম এক স্বনাম ধন্য খেলোয়াড় মেহতাব| জীবনের শেষ খেলাতে ১৬ বছরের বাচাদের সাথে হেরে গেলেন| কিন্তু খেলায় হার জিত আছে|
দুঃখের ব্যাপার তার শেষ দিনে তার সতীর্থ রা তার জন্যে অপেক্ষা করলেন না|
তাকে সন্মান জানালেন বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়রা|

নাটকীয় পরিস্থিতি তে দল বদল

অথচ কয়েক মাস আগে এক নাটকীয় পরিস্থিতে তিনি ইস্ট বেঙ্গল কে কথা দিয়ে ও মোহন বাগানে চলে যান মেহতাব|
ওনার স্ত্রী “তোমরা শুনেছ কি মেহতাব এর কান্না” সূচক এক প্রবন্ধ লেখেন ফেসবুকে|
শান্তি দা আমাকে ট্যাবলেট দিতো সুলভ ভাষণ সোনা যায় তার মুখে|
তখন মোহন বাগান বিশ্বের সেরা দল হয়ে যায়|
আর ইস্ট বেঙ্গল হয়ে যায় সৎ মা| পরম প্রিয় নিতু বাবু আর শান্তি বাবুও পর হয়ে যান|

কিন্তু মোহন বাগানের পুরোনো অভ্যাস পাল্টায়নি|
নির্বাচনী চমকের জন্যে তাকে দলভুক্ত করে শেষ লগ্নে ছিবড়ে করে ফেলে দেওয়া হলো|
মেহতাব ইস্টবেঙ্গলে থাকলে হয়তো এর থেকে ভালো বিদায়ী অভ্যার্থনা আশা করতে পারতেন|
এবার দেখার মরসুমের শেষে আবার টাকা না পাওয়ার অভিযোগে ফিফাতে ছুটতে হয় কিনা|